গর্ভকালীন বমি
গর্ভকালীন সময়ে বমি প্রতিরোধের ব্যাপারে কিছু কথা বলব গর্ভকালীন সময়ে শতকরা 70 ভাগ মেয়ে এই অভিযোগ করে থাকেন। আমি আমার চেম্বারে যে সমস্ত রোগীরা গর্ভকালীন সময়ে প্রথমভাগেই এ সমস্ত সমস্যা নিয়ে আসে তাদেরকে আমি এভাবেই বুঝায় যে যখন একটি মানব সন্তান গর্ভে আসে তখন সেই মায়ের শরীরে অনেক ধরনের হরমোন পরিবর্তন হয় এবং এই হরমোন পরিবর্তন অনাগত বাচ্চার সুস্বাস্থ্য এবং সুন্দরভাবে বৃদ্ধি হওয়ার জন্যই। সুতরাং যদি দেখেন গর্ভকালীন সময়ে মাথা ঘুরছে, বমি ভাব এর সমস্ত হয়ে থাকে তাহলে তাকে খুশি হতে হবে। এই জন্যই এই পরিবর্তনগুলো মধ্য দিয়েই বোঝা যাবে যে তার গর্ভের বাচ্চার ঠিকভাবে বেড়ে উঠছে কিনা। জেনে নেই তাহলে এই যে অস্থায়ী অসুস্থতা থেকে একটি মেয়ে কিভাবে পরিত্রান পাবেন এবং এর সাথে কিভাবে নিজেকে মানিয়ে নেবে। প্রথমে ধরা যাক দিনের শুরু থেকে সাধারণত বমিভাব ক্লান্তি অনুভব শুরু থেকেই শুরু হয় যেমন সকাল বেলাটা এজন্য আমরা থেকে আরেকটা নামে বলে থাকে মর্নিং সিকনেস সকালে ঘুম থেকে উঠে সাথেসাথেই বিছানা থেকে নেমে 15 মিনিট সময় বিছানায় ছুড়ে হালকা ব্যায়াম করুন। তারপরে সকালে যে প্রথম খাবারটি শুরু করবেন সেটা শুকনো খাবার খেলে সবচেয়ে ভালো হয়। শুকনো খাবার বলতে আমি বুঝিয়েছি রুটি বা আলুর চিপস অথবা অন্য কোন খাবার যেমন মোটা হলে ভালো হয়। তারপরে আপনি স্বাভাবিক খাবার শুরু করুন। অতিরিক্ত তেল চর্বি জাতীয় খাবার এবং অতিরিক্ত ঝাল মসলা জাতীয় খাবার অবশ্যই আপনি বর্জন করবেন। কারণ এই খাবারগুলো হজম হতে অনেক সময় নেয় যা বমি উদ্রেগ করতে পারে। খাবার আগে বেশি পরিমাণ পানি খাওয়া বা খাবার সময় বেশি পরিমাণ পানি খাওয়া বমির কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে। অতিরিক্ত গন্ধ যুক্ত খাবার এড়িয়ে চলতে হবে। যে সমস্ত মেয়েরা বাড়িতে রান্নাবান্না করেন সে সমস্ত মেয়েরা অবশ্যই রান্নাঘরে কাজ করার সময় জানালা খুলে পর্যাপ্ত পরিমাণ বাতাসে আসা-যাওয়া করতে পারে সেই ব্যবস্থা করে তখন রান্না করবেন। আর যারা বাইরে কাজ করেন তারা অবশ্যই যখন বাইরে যাবেন বাসার তৈরি খাবার খাওয়ার চেষ্টা করবেন। সবসময় পানির বোতল রাখবেন এবং কিছুক্ষণ পরপরই অল্প অল্প করে পানি খাবেন কারণ একবারে আপনি যদি আধা গ্লাস পানি খেতে যান তাহলে সেটা বমি হয়ে যাবে। খাবার ব্যাপারে আরেকটি জিনিস খেয়াল রাখতে হবে একবারে বেশি পরিমাণ খাবার না খেয়ে 2 ঘন্টা অথবা আড়াই ঘন্টা পর পর অল্প অল্প করে খাবার খাবেন। সকালবেলা একটু ঘুরাঘুরি করলেও অনেক সময় বমির ভাব কম হয়। গর্ভবতী মাকে পর্যাপ্ত পরিমাণে বিশ্রাম নিতে হবে যেমন রাতে আট ঘণ্টা ঘুমাতে হবে এবং মধ্যদুপুর অথবা মধ্যভাগে তাকে দুই ঘন্টা বিশ্রাম নিতে হবে। গর্ভাবস্থায় আমরা সাধারণত গর্ভবতী মাকে ভিটামিন আয়রন জাতীয় খাবার খেতে দেই এই সমস্ত ভিটামিন ক্যাপসুল সবসময় খাবার পরে অথবা খাবারের মাঝখানে গ্রহণ করার চেষ্টা করুন তাহলে সময় বমি ভাব কম হবে। তবে পরিশেষে একটি কথা মনে রাখতে হবে যে বমি ভাব অথবা অস্বস্তি লাগা এই যে সমস্যাগুলো এগুলা কিন্তু একেবারে যাবে না আমি আগেই বলেছি কিছু হরমোনের পরিবর্তন হয় যে পরিবর্তনগুলোর মাধ্যমে গর্ভের বাচ্চা সুন্দর ভাবে বেড়ে উঠছে সুতরাং যদি কোন মেয়ে এই পরিবর্তনগুলো কে সুন্দর ভাবে এবং সহজভাবে মেনে নেন তাহলেই তার জন্য সবচেয়ে বেশি মঙ্গলজনক। সুস্থ থাকুন ভালো থাকুন।